যে মাটি দিয়ে হযরত আদম (আঃ) কে তৈরি করা হয়েছিল

7614

যে ধরণের মাটি দিয়ে- আপনি জানেন কি, মহান আল্লাহ তায়ালা হযরত আদম (আ.)কে কি ভাবে তৈরি করেছিলেন? অনেকেই জানেন।

যারা জানেন না, তারা নিচের লেখাটি পড়লে সহজেই বুঝতে পারবেন। হযরত আদম (আ.)কে তৈরির ইতিহাস নিম্নরূপ:

আল্লাহ তাআলা হজরত আদম [আ.]-কে মাটি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। মাটি প্রক্রিয়াজাত করে তাঁর ‘খামিরা’ প্রস্তুত হওয়ার পূর্বেই আল্লাহ ফেরেশতাদের জানালেন, অচিরেই তিনি মাটি দিয়ে একটি নতুন সৃষ্টি তথা মাখলুক নির্মাণ করতে যাচ্ছেন।

সেই মাখলুককে ‘বাশার’ (মানুষ) বলা হবে এবং জমিনে সে আল্লাহ তাআলার প্রতিনিধিত্বের সম্মান লাভ করবে।

হজরত আদম [আ.]-কে তৈরির উদ্দেশ্যে বানানো খামিরা প্রক্রিয়াজাতকৃত মাটি থেকে প্রস্তুত করা হয়েছিলো এবং এমন মাটি থেকে প্রস্তুত করা হয়েছিলো, যা ছিলো প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল।

খামির-মাটি দিয়ে সৃষ্ট আদমের দেহাবয়ব শুকিয়ে মাটির পাত্রের মতো হয়ে গেলো এবং তাতে আঘাত করলে ঠনঠন শব্দ হতে লাগলো।

আল্লাহ তাআলা এই মাটি-নির্মিত দেহাবয়বের ভেতরে ‘রুহ’ ফুঁকে দিলেন এবং নিজের ইচ্ছাধীন শব্দ ‘কুন’ (হয়ে যাও) বললেন, অতঃপর সঙ্গেই সঙ্গেই তা মাংস, চর্ম, হাড়, রগ, শিরা-উপশিরা বিশিষ্ট জীবন্ত মানুষ হয়ে গেলো ।

এই মানবের ভেতরে অনুভূতি, ইচ্ছাশক্তি, জ্ঞান-বুদ্ধি, শিক্ষালাভের প্রেরণা ও অসংখ্য মানবিক গুণাবলি দৃষ্ট হতে লাগলো। তখন ফেরেশতাদের প্রতি নির্দেশ জারি হলো, তোমরা এর প্রতি সিজদাবনত হও।

সঙ্গে সঙ্গেই ফেরেশতা সকলেই আল্লাহ তাআলার আদেশ পালন করে সদ্য-নির্মিত আদম [আ.]-কে সিজদা করলেন।

হজরত আদম [আ.]-কে সৃষ্টির পূর্বাপর অবস্থা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারিমে ইরশাদ করেছেন- ‘আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করি (তোমাদের অস্তিত্বে নিয়ে আসি এবং এটাই আমার কাজ), তারপর তোমাদের (মানবজাতির) আকৃতি দান করি এবং

তারপর (সেই সময় এলো যে আমি) ফেরেশতাদেরকে আদমকে সিজদা করতে বলি; ইবলিস ব্যতীত সবাই সিজদা করলো।

(সে আমার আদেশ মানলো না।) সে সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হলো না।’ [সুরা আ’রাফ, আয়াত ১১]

অন্য একটি আয়াতে বলেছেন- ‘আমি তো মানুষকে সৃষ্টি করেছি গন্ধযুক্ত কর্দমের শুষ্ক ঠনঠনা মৃত্তিকা (শুষ্ক হয়ে খনখন শব্দে বাজে এমন খামিরাবিশিষ্ট মাটি) থেকে এবং তার আগে সৃষ্টি করেছি জিন অত্যুষ্ণ অগ্নি থেকে।

স্মরণ করো, যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাগণকে বললেন, আমি গন্ধযুক্ত কর্দমের শুষ্ক ঠনঠনা মৃত্তিকা থেকে মানুষ (মানবজাতি) সৃষ্টি করছি; যখন আমি তাকে (তার দেহাবয়বকে) সুঠাম করবো (সারকথা, তার অস্তিত্ব পূর্ণতায় পৌঁছে যাবে) এবং তাতে আমার পক্ষ থেকে রুহ (প্রাণ) সঞ্চার করবো তখন তার প্রতি সিজদাবনত হয়ো।

তখন ফেরেশতাগণ সকলেই একত্রে সিজদা করলো, ইবলিস ব্যতীত, সে সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে অস্বকার করলো।’ (সুরা হিজর, আয়াত ২৬-৩১)

পুত্রসন্তান লাভের জন্য হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর দোয়া জেনে নিন…

মানুষ বর্তমান সময়ে মানুষের কাছে সন্তান-সন্তুতি, ধন-সম্পদ কামনা করে। অথচ এর কোনোটিই মানুষ কাউকে দিতে পারে না। যা সরাসরি শিরক। বৃদ্ধ বয়সে হযরত ইব্রাহিম (আঃ) আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া করলেন সৎ পুত্র সন্তানের জন্য। আল্লাহ তাআলা তার দোয়া কবুল করলেন। তাঁকে নেক পুত্র সন্তান দান করলেন। যা বিস্তারিত এসেছে সুরা সফফাতে।

আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুসলিমার জন্য হযরত ইব্রাহিম (আঃ) পুত্রসন্তান লাভের এ আবেদনটি তুলে ধরেছেন। যাতে বান্দা এ দোয়ার মাধ্যমে তাঁর নিকট সন্তান কামনা করতে পারে। দোয়াটি তুলে ধরা হলো- উচ্চারণ : রাব্বি হাবলি মিনাস সালিহিন।’ (সুরা সাফফাত : আয়াত ১০০) অর্থ : হে আমার লালন পালনকারী! আমাকে এক সৎপুত্র দান করুন।