মেয়ের ‘অসামাজিক কার্যকলাপে’ অতিষ্ঠ হয়ে তাঁকে খুন করে বাবা !

2187

সপ্তাহখানেক আগে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার তালুক ঈশাদ নয়াটারি গ্রামে মাটি খুঁড়ে অজ্ঞাতনামা এক তরুণীর অ’র্ধ’গ’লি’ত লা’শ দেখতে পান স্থানীয় লোকজন।

খবর পেয়ে পীরগাছা থানা থেকে পুলিশ এসে লা’শ’টি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

তখন তরুণীর বাবা থানায় গিয়ে লা’শ শনাক্ত করে বলেন, লা’শ’টি তাঁর নিখোঁজ মেয়ের। এরপর অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।

মামলার সাত দিনের মাথায় পুলিশ জানিয়েছে, লিপি বেগম (২২) নামের ওই তরুণীকে হ’ত্যা করেছিলেন তাঁর বাবা রফিকুল ইসলাম নিজেই।

মেয়ের ‘অসামাজিক কার্যকলাপে’ অতিষ্ঠ হয়ে তাঁকে খুন করে লা’শ পুঁতে রাখেন বলে বাবা পুলিশকে বলেছেন। লিপির বাবা বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। রফিকুল বর্তমানে কারাগারে আছেন।

গতকাল সোমবার রাতে রংপুর জেলার সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম গণমাধ্যমে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এসব তথ্য জানান।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন বলেন, গত ২৫ জুলাই দুপুরে পীরগাছা উপজেলার তালুক ঈশাদ নয়াটারি গ্রামে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির কাছে সমতল জমিতে উঁচু জায়গা দেখে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হয়।

পরে মাটি খুঁড়ে ওই তরুণীর মাথা দেখতে পান লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটির নিচ থেকে লা’শ’টি উদ্ধার করে থানা নিয়ে যায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আলমের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য অনুযায়ী, পুলিশের কাছে লিপি বেগমের বাবা রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে বিবাহবিচ্ছেদের পর অস্বাভাবিক জীবন শুরু করেন।

মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েন তিনি। গত ২২ জুলাই শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে লিপিকে ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসরোধে হ’ত্যা করেন তিনি।

এরপর সেই লা’শ টেনে নিয়ে একটি জমিতে পুঁতে রাখেন। মেয়ের প্রতি অতিষ্ঠ হয়ে বাবা এ কাজ করেছেন বলে দাবি তাঁর।

পুলিশ জানায়, হ’ত্যা ও লা’শ গুমে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। রফিকুলকে হ’ত্যা মামলার আসামি করে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় আদালতে পাঠানো হলে সেখানে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর রাতেই তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

অনেক স্বপ্ন নিয়ে পুলিশের চাকরি করেন এমন এক ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন বাবা। কিন্তু তার অভিযোগ, নিজের মেয়ের কারণেই সেই বিয়ে টেকেনি।

এরপর এলাকায় এসে মা’দ’কে’র কারবার ও অ’সা’মা’জি’ক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে মেয়েটি।

এ নিয়ে গ্রামে একাধিকবার সালিস বৈঠকও হয়। একপর্যায়ে তাকে জোরপূর্বক ঢাকার সাভারে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজে পাঠানো হয়।

সর্বশেষ গত কোরবানির ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এলে মেয়ে অ’ন্তঃ’স’ত্ত্বা বলে জানতে পারেন বাবা রফিকুল ইসলাম। এতে তিনি লোকলজ্জার ভয়ে মেয়ের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

এর একপর্যায়ে গত ২২ জুলাই রাত ১টার দিকে মেয়েকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলায় পা দিয়ে শ্বা’স’রো’ধে হ’ত্যা করেন বাবা। পরে বাড়ির পাশের জমিতে পুঁতে রাখেন লাশ। কিন্তু কেউ যদি দেখে ফেলে, এই ভয়ে দুই দিন পর লা’শ তুলে দূরে নিয়ে গিয়ে পুঁতে রাখা হয়। এমনি এক লো’ম’হ’র্ষ’ক ঘটনার সাত দিনের মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।