
মসজিদে জমি দান করে সমাজে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন এক ভিক্ষুক দম্পতি। এই ভিক্ষুক দম্পতির বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের দক্ষিণ গোপাল রায় গ্রামে। তারা হলেন বৃদ্ধ খইমুদ্দিন (৮০) ও হামিজোন বেগম (৬৫)।







































সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এক নির্জন কুঁড়েঘরে তাদের বসবাস। প্রতিদিনের ভিক্ষার চালেই জ্বলে তাদের চুলা। একদিন ভিক্ষা না করলে তাদের মুখে খাবার জোটে না।
অনেক সময় অনাহারেই দিন কাটে তাদের। তারপরও জীবন বাঁ’চা’তে ভিক্ষা করতে হয় ওই দম্পতিকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ভিক্ষুক দম্পতি নিসন্তান থাকায় মৃ”ত্যু”র আগে শেষ সম্বল ভিটে-বাড়ির ৪ শতক জমি গত তিন বছর আগে ওই গ্রামে নিত্য ডিঘি জামে মসজিদের নামে দলিল করে দেন।

























































তাদের এমন দান সমাজে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বৃদ্ধ খইমুদ্দিন প্যারালাইসিস রোগী তারপরও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে পেটের দায়ে গ্রামে গ্রামে ভিক্ষা করতে বের হন স্ত্রী হামিজোন বেগম। তাদের এমন দুরবস্থায় ভাগ্যে জুটেনি কোনো বয়স্কভাতার কার্ড।
হামিজোন বেগম বলেন, ভিটেবাড়ি টুকু মসজিদের নামে দান করে আমরা দুজনই খুশি। আমাদের কোনো সন্তান নেই। তাই মসজিদে জমি দান করেছি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের বয়স্কভাতার কার্ড হয়নি।

























































প্রতিবেশী আছমা বেগম (৪০) বলেন, তারা অসহায় গরিব মানুষ। দেখার কেউ নেই। সারাদিন বাড়ি বাড়ি ঘুরে যেটুকু চাল পান তাই রান্না করে খান।
ওই এলাকার তৈয়ব আলী (৪০) জানান, ওই বৃদ্ধ দম্পতির মৃত্যুর পর তাদের দাফন কাফনের ব্যবস্থা গ্রামবাসী করবে। তাদের এমন দান সমাজের বিত্তশালীদের চোখ খুলে দিয়েছে।
ওই গ্রামের নিত্য ডিঘি জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল সোবাহান জানান, বৃদ্ধ খইমুদ্দিন ও হামিজোন বেগম তিন বছর আগে বাড়িভিটের জমি মসজিদের নামে দলিল করে দিয়েছেন।

























































কাকিনা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শহিদুল হক শহিদ জানান, ভিক্ষুক দম্পতির জমি দান করার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে তাদের বয়স্কভাতা না হলে তা দেয়ার ব্যবস্থা করব।
এক রাতেই তৈরি সুজা মসজিদ!
দিনাজপুরের হিলি-ঘোড়াঘাটের মধ্যবর্তী চোরাগাছা গ্রামে অবস্থিত সুলতানি আমলের নির্মিত সুজা মসজিদ।]
জনশ্রুতি আছে এই মসজিদ এক রাতে তৈরি করা হয়েছে। সুলতানি আমলের বিরল স্থাপত্য ধারায় নির্মিত সুজা মসজিদটি নামাজ কক্ষ ও বারান্দা দিয়ে দুই অংশে বিভক্ত।

























































নামাজ কক্ষে জায়গার পরিমাণ সাত দশমিক ৮৪ মিটার আর বারান্দা লম্বায় চার দশমিক ৮৪ মিটার ও চওড়া দুই দশমিক ১২ মিটার। চুন সুরকির সাহায্যে ছোট আকৃতির ইট দ্বারা নির্মিত মসজিদের দেওয়াল এক দশমিক ৮০ মিটার প্রশস্ত।
নামাজ কক্ষের ছাদ বাঁকা আকৃতির গম্বুজ দ্বারা আবৃত। বারান্দায় রয়েছে এক সারিতে অনুরুপ তিনটি গম্বুজ। তাছাড়া নামাজ কক্ষের চারকোণে চারটি ও বারান্দায় দুইটি পাথরের রুরুজ আছে।
মসজিদে প্রবেশের জন্য পূর্বদিকে তিনটি ও উত্তর-দক্ষিণে একটি খিলানকৃত প্রবেশপথ রয়েছে। বারান্দার উত্তর পাশে একটি প্রবেশপথ রয়েছে। এই মসজিদের স্থাপত্যশৈলীর সঙ্গে হোসেন শাহী (১৬’শ খ্রি.) আমলের বেশ মিল পাওয়া যায়।

























































চোরাগাছা গ্রামের ৯৪ বছর বয়সী সমসের আলী বলেন, ‘আমি আমার বাপ-দাদাদের নিকট এই মসজিদের ইতিহাস শুনে আসছি।
সুজা মসজিদের বয়স প্রায় ৪০০ বছরেরও বেশী হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এটি সুলতানি আমলের মসজিদ। দাদাদের মুখ থেকে শুনছি মসজিদটি আল্লাহর তরফ হতে রাতারাতি নির্মাণ হযেছে।’
সুজা মসজিদের ইমাম মিজানুর রহমান বলেন, ‘এই মসজিদে আমি দীর্ঘদিন যাবত ইমামতি করছি। দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ ছুটে আসে নামাজ পড়তে ও মসজিদটি দেখতে।’
মসজিদ দেখতে আসা জামাত আলী বলেন, ‘আমার বাড়ী অনেক দূরে। আমার ছেলে অসুস্থ। তার জন্য মান্নত করছি এই মসজিদে।’
জামাত আলীর মতো অনেকের বিশ্বাস এই মসজিদে নামাজ পড়ে আল্লাহর নিকট কিছু চাইলে আল্লাহ তা পূরণ করেন।