তামিম ইকবালের অবসর এবং প্রত্যাবর্তন কাণ্ড নিয়ে ঝড় বয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে, তারপর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের মুখ ভার হয়ে থাকাটাই স্বাভাবিক। ছিলও তাই।
মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-ভারত নারী দলের তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টির সিরিজ উদ্বোধন করতে এসেও গোমড়া মুখেই মাঠ ছেড়েছেন পাপন। কারণ মেয়েদের দলটাও যে হেরে গেছে ৭ উইকেটে, একদমই প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে না পেরে।
দুপুর বেলা বিসিবি কার্যালয়ে এসেছিলেন পাপন। বিসিবি সভাপতি দুই ইনিংসের মাঝের সময়টায় গণমাধ্যমে কথা বলবেন, এমন খবর চাউর হয়েছিল।
অনেকগুলো টিভি চ্যানেলের ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন অপেক্ষায় ছিল পাপনের। কিন্তু তিনি আসেননি। খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ না দিয়ে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে যেতে গাড়ির কাচ নামিয়ে সংক্ষেপে কিছু কথা বলে গেছেন পাপন।
যারা বিসিবি সভাপতিকে চেনেন, তারা ভালো করেই জানেন মাইক্রোফোন আর ক্যামেরার সামনে পাপনের সাবলীলতার কথা। অথচ ঝড়ের পর পাপন নিষ্প্রভ।
মেয়েদের দলটা হারলেও একেবারে অখুশি নন পাপন, ‘আজকে প্রথম তো। ওদের সঙ্গে যখন আমাদের দেখা হয়েছিল, ওরা বলেছিল মিরপুরে আমাদের হোম অব ক্রিকেটে কোনো ম্যাচ খেলেনি। ওদের একটা খুব শখ ছিল।
আমি বলেছি ঠিক আছে, পরেরবারই হবে। ভারত নারী দল অনেক শক্তিশালী। টপ তিনটার একটা আমার অ্যাসেসমেন্ট। ইন্ডিয়া, অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ড অনেক শক্তিশালী।
তারপরও ভালো খেলেছে, ভালো খেলবে ইনশা আল্লাহ। আমাদের তো ওই পরিমাণ সুযোগ-সুবিধা ওদের দিতে পারি না। ওরা যেরকম পায়। পটেনশিয়াল খুবই ভালো।’
পরপর দুটো দিন, চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের কাছে লিটন-সাকিবরা হেরেছেন বড় ব্যবধানে। ঢাকায় মেয়েরাও হারল। বোর্ড সভাপতির তাই মন খারাপ, ‘মন তো খারাপ হবেই। এটা সবারই।
সারা দেশের মানুষেরই মন খারাপ।’ এই বলেই গাড়ির জানালার কাচ তুলে গম্ভীর মুখে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান পাপন।
মেয়েদের ম্যাচ দেখতে এলেও অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রভাবশালী বোর্ড পরিচালকদের নিয়ে একসঙ্গে মধ্যাহ্ন ভোজ সেরেছেন পাপন। ছিলেন ওবায়েদ নিজাম, জালাল ইউনুস ও খালেদ মাহমুদ সুজন। আলাপ হয়েছে তামিমের অবসর কাণ্ড নিয়েও।
কি কারণে তামিম এমন চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কেন ব্যাপারটা প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত গড়াল, কেন বিসিবির পক্ষে সম্ভব হল না ব্যাপারটা মীমাংসা করার এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তবে এসব নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না কোনো পরিচালকই। তবে অনেকেরই অভিযোগের আঙুল নাফিস ইকবালের দিকে। বোর্ডের চাকরি করা নাফিসকে মেসেজ দিয়েছিলেন পাপন, যেটা তিনি ওয়েস্টিন হোটেলে পড়েও শুনিয়েছেন। তামিমের ভাই হওয়ার জন্যই কি নাফিস সেই মেসেজের জবাব দেননি, ম্যানেজার নাফিসের বদলে অন্য কেউ থাকলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া সহজ হত কি না এসব নিয়েও হয়েছে আলোচনা। সুত্রঃ দেশ রুপান্তর