ডেঙ্গু মশাসহ বিষাক্ত প্রাণী থেকে বেঁচে থাকার দোয়া

1357

সম্প্রতি দেশজুড়ে ডেঙ্গু মশার কামড়ে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্ষতিকর বিষাক্ত পোকা-মাকড় ও প্রাণী থেকে মুক্ত থাকতে সাহাবায়ে কেরামকে শিখিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ একটি দোয়া। এ দোয়ার নিয়মিত আমলে যে কোনো বিষাক্ত প্রাণীর আক্রমণ ও ক্ষতি থেকে মুক্ত থাকবে মানুষ। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একবার এক লোককে বিচ্ছু (বিষাক্ত প্রাণী) দংশন করার কারণে লোকটি ব্যথার কারণে রাতে ঘুমাতে পারল না। সকালে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিষয়টি জানালে তিনি বললেন, যদি সন্ধ্যা বেলায় এ দোয়াটি পড়তে তাহলে সকাল পর্যন্ত বিচ্ছুর (বিষাক্ত প্রাণীর) দংশন তাকে কোনো ক্ষতি করতে পারতো না।’ (মুসলিম, ইবনু মাজাহ, আবু দাউদ)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শেখানো দোয়াটি হলো-

উচ্চারণ : আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিং শাররি মা খালাক্বা।

অর্থ : আমি আল্লাহর সব পূর্ণ কালেমাসমূহের উসিলায়, তাঁর সৃষ্ট সব (বিষাক্ত) প্রাণীর অনিষ্টতা থেকে আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

এ দোয়ার ফজিলত ও উপকারিতা সম্পর্কে অন্য হাদিসে এসেছে-
– হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি সন্ধ্যা বেলায় উক্ত দোয়াটি ৩ বার পড়বে, ওই রাতে কোনো বিষাক্ত প্রাণীর বিষ তাকে কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’

– হজরত সুহাইল ইবনে আবি সালেহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমাদের পরিবারের সবাই এ দোয়াটি মুখস্ত করে নিয়েছিল এবং নিয়মিত তা পড়তো, একদিন আমাদের পরিবারের একটি মেয়েকে বিচ্ছু দংশন করলো কিন্তু সে কোনো ব্যথাই অনুভব করেনি। (মুসনাদে আহমদ)

– হজরত খাউলা বিনতে হাকিম সুলামি রাদিয়াল্লাহু আনহা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি কোনো এলাকায় অবতরণ করার পর উক্ত দোয়াটি পড়বে ওই এলাকা থেকে না যাওয়া পর্যন্ত তাকে কোনো কিছু (কোনো হিংস্র প্রাণী কিংবা মানুষ শত্রু) কোনো ধরণের ক্ষতি করতে পারবে না।’ (মুসলিম, তিরমিজি)

প্রিয় নবির শেখানো এ দোয়াটির নিয়মিত আমলই মানুষকে মশাসহ সব ক্ষতিকর বিষাক্ত প্রাণীর আক্রমণ থেকে হেফাজত করতে পারে। তাই মানুষের উচিত বিষাক্ত পোকা-মাকড়, মশা, সাপ-বিচ্ছু, হিংস্র প্রাণীসহ যাবতীয় বিষাক্ত ক্ষতিকর জীবানূ থেকে মুক্ত থাকা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুন্নাতের ওপর আমল করার, সুন্নাতি জীবন যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন আক্রমণ থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

শরীর সুস্থ রাখতে যে দোয়া পড়তেন বিশ্বনবি….

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শরীরের সাদকাহ আদায়ের কথা বলেছেন। মানবদেহে অনেক জোড়া রয়েছে, প্রতিটি জোড়ার হক আদায় করার কথাও বলেছেন তিনি। শরীরের এ সাদকাহ বা জোড়ার হক আদায়ে প্রতিদিন সালাতুজ জোহা বা চাশতের নামাজ পড়তে বলেছেন।

যারা চাশতের ২ কিংবা ৪ রাকাআত নামাজ পড়বে, ওই ব্যক্তি শরীরের সাদকাহ বা জোড়ার হক আদায় হয়ে যাবে। আবার ভালো কাজ ও ভালো আচরণেও শরীরের হক আদায় হয় বলেছেন বিশ্বনবি।

বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে শরীরকে সুস্থ রাখতে সকাল সন্ধ্যা দোয়ার আমল করতে বলেছেন। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকাল-সন্ধ্যায় ৩ বার নিজের শরীর মোবারককে সুস্থ রাখতে এ দোয়া পড়তেন-

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা আফেনি ফি বাদানি, আল্লাহুম্মা আফেনি ফি সাময়ি, আল্লাহুম্মা আফেনি বি বাসারি; লা ইলাহা ইল্লা আন্তা।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমার দেহ সুস্থ রাখুন। হে আল্লাহ! আমাকে সুস্থ রাখুন আমার শ্রবণ ইন্দ্রিয়ে। হে আল্লাহ! আমাকে সুস্থ রাখুন আমার দৃষ্টিশক্তিতে। আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ নাই।’

মুমিন মুসলমানের উচিত, প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পড়া দোয়ায় নিজেদের শারীরিক সুস্থতার জন্য সকাল-সন্ধ্যায় তথা ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর বেশি বেশি এ দোয়া করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শরীর সুস্থ রাখতে বিশ্বনবির শেখানো এ দোয়া বেশি বেশি পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।