গরমে লেবুর শরবত খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন…

1637

গরমে লেবুর শরবত খাওয়ার- অনেক স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ সকালে চা বা কফির বদলে এক গ্লাস লেবুর শরবত পান করার মাধ্যমে দিন শুরু করে থাকেন। কিন্তু অনেকেই লেবুর শরবতকে খুব একটা গুরুত্ব দেন না। তারা ভাবেন পানির সাথে লেবু মিশিয়ে পান করলে কী এমন উপকার হবে? কিন্তু না জেনেই আপনি করছেন এই ভুলটি।

জেনে নিন লেবুর শরবত বা লেবু পানির গুণাবলি ও উপকারিতা সম্পর্কেঃ

তরল খাবার ও পানি মিলিয়ে একজন মানুষের দৈনিক ২-৩ লিটার পানি গ্রহণ করা উচিত। শরীরে পানির চাহিদা পূরণ করার জন্য সবচেয়ে সেরা উপাদান পানি নিজেই। কিন্তু শুধু পানি পান করতে অনেকেই পছন্দ করেন না। তাই পানির সাথে লেবু যোগ করা হলে পানিতে বাড়তি স্বাদ আসে।

ভিটামিন সি দেয়-

লেবু, কমলা, আঙুর ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি থাকে। আর এই ভিটামিন সি হলো এক ধরনের প্রাথমিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও ভিটামিন সি মানব দে হের হৃদযন্ত্রের রোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার এবং নিম্ন র ক্তচাপের ঝুঁকি কমায়।

ত্বক ভাল রাখে-

লেবুতে প্রাপ্ত ভিটামিন সি ত্বকের ভাঁজ পড়া কমায়। যারা বেশি ভিটামিন সি গ্রহণ করেন তাদের ত্বক শুষ্ক হওয়া ও ভাঁজ পড়ার ঝুঁকিতে থাকার সম্ভাবনা অনেক কম।

ওজন কমাতে সাহায্য করে-

লেবুতে পাওয়া পলিফেনল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ওজন কমাতে দারুণ কাজ করে। সেই সাথে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।

হজমে সক্ষমতা বাড়ায়-

কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে অনেকে প্রতিদিন সকালে লেবু পানি পান করেন। লেবু পানি গরম বা ঠাণ্ডা যেভাবে পান করা হোক না কেন এতে মানব দে হের পরিপাক ক্ষমতার উপকার হয়। টক লেবু খেলে হজম ক্ষমতা বাড়ে এবং শরীরে বি ষা ক্ত পদার্থ তৈরি হওয়া থেকে প্রতিরোধ করে।

দূর্গন্ধ দূর-

হাতের দূর্গন্ধ দূর করতে লেবু নিয়ে হাতের তালুতে ব্যবহার করতে পারেন। লেবু দিয়ে দূর্গন্ধযুক্ত শ্বাস-প্রশ্বাসও দূর করা সম্ভব। মুখের দূর্গন্ধ বলতে শুধু সাধারণ দূর্গন্ধ নয়, বিভিন্ন খাবারের গন্ধও যেমন আদা, পেঁয়াজ কিংবা মাছের গন্ধ দূর করা যায়।

কিডনিতে পাথর দূর-

লেবুতে থাকা সাইট্রিক এসিড কিডনিতে সাদা পাথর হওয়া প্রতিরোধ করে। বেশি করে সাইট্রিক এসিড গ্রহণ করলে নতুন করে সাদা পাথর হওয়ার ঝুঁকিও কমে। লেবু পানি পান করার ফলে মানবদেহে শুধুমাত্র সাইট্রিক এসিড-ই যোগান পায় না, সেই সাথে পর্যাপ্ত পানিও সরবরাহ থাকে।

দিনে কত লিটার পানি পান করলে সুস্থ থাকবেন?

সুস্থ থাকার জন্য পানি পানের বিকল্প নেই। পানি আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে বিশেষভাবে কাজ করে। শরীরের প্রতিটি কোষ, অঙ্গ ও টিস্যু পানির ছাড়া সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। পানি শরীরে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্যে করে। পানি ত্বক ভালো রাখে, হজমে সাহায্য করে, শরীরে তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে।

তাই শরীরে পানির ঘাটতি হলে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়। তবে আমার অনেকেই জানি না প্রতিদিন কত লিটার পানি পান করা জরুরি। প্রতিদিন অন্তত দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করলে আপনি সুস্থ থাকবেন। পানি পান করা নিয়ে বিভিন্ন তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট টপ টেন হোম রেমেডি।

আসুন জেনে নেই যেসব রোগ থেকে মুক্তি দেবে পানি-

১. শরীরে পানির ঘাটতি হলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন ও রক্ত প্রবাহ কমে যায়। তাই মাথা ব্যথার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

২. মানুষের মস্তিষ্ক ৯০ ভাগ পানি দিয়ে তৈরি। তাই পানিশূন্যতা স্মৃতি, মেজাজ ও সীদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলে।

৩. অনেকের মুখে দুর্গন্ধ হয়। এটা খুবই অস্বস্তিকর। পানির ঘাটতি হলে শরীর লালা কম উৎপাদন করে ও মুখে ব্যাক্টেরিয়া বেশি তৈরি হয়। তাই মুখে দু র্গ ন্ধ হয়। তাই বেশি করে পানি পান করুন।

৪. পানিশূন্যতা হলে কোষ্ঠকাঠিন্য, বুক জ্বালাপোড়া ও হজমের সমস্যা হয়ে থাকে। এসব সমস্যা হলে পানি পান করুন।

৫. প্রস্রাবের নিয়মিত হ্ওয়ার জন্য পানি পানের বিকল্প নেই। প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ হলে প্রচুর পানি পান করুন।

শরীরে পানিশূন্যতা হলে কী করবেন ?

১. প্রতিদিনে দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করুন।

২. সকালে ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে পানি পান করুন।

৩. বাইরে বের হলে সঙ্গে পানির বোতল রাখুন।

৪. তরমুজ, শসা, টমেটো, বাধাকপি খেতে পারেন।