রাতের রানীরা দিনেও থেমে নেই, ঘণ্টাপ্রতি টাকা নিয়ে দিচ্ছে সার্ভিস

1680

ধানমন্ডি, গুলশান, বারিধারা ও উত্তরা—এসব এলাকা থেকে নানা ব্যক্তি আসেন প্রিয়ার (ছদ্মনাম) বাসায় অতিথি হয়ে। অথচ প্রিয়ার উত্তরার এই ফ্ল্যাটে থাকেন তার এক বান্ধবীসহ।

বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি এই ফ্ল্যাটের বিল মেটাতে হয় ‘অতিথিদের থেকে প্রাপ্য উপহার’ থেকেই!

সোমবার, সন্ধ্যা ৭টা। প্রিয়ার ফ্ল্যাটের সামনে টয়োটার একটি গাড়ি থেমেছে। আনুমানিক ৩২/৩৫ বছরের এক যুবককে নামিয়ে দিয়ে গাড়িটি আবার চলে গেল। এই যুবকের গন্তব্য সেই ভবনের চার তলা, অর্থাৎ প্রিয়ার বাসায়। সেই যুবক আবার নেমেও গেলেন, তবে রাত ১১টায়।

রাজধানীজুড়ে করোনাকালে বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করে অনেকে ‘অতিথি’ হচ্ছেন বিভিন্ন ফ্ল্যাটে। তবে এই অতিথিরা একটু ভিন্ন ঘরানার। প্রিয়ার সেই বান্ধবী জেরিন (ছদ্মনাম) জানালেন সেই গল্প।

ফেসবুকে ‘রিয়েল সার্ভিস’ নামে এক গ্রুপের সদস্য হন প্রিয়া। বিভিন্ন পেজের মাধ্যমে নিজের মুখ না দেখিয়ে নানা ছবি পোস্ট করেন। এসব মাধ্যমেই জোগাড় হয় ‘অতিথি’।

ফেসবুক পেজের মাধ্যমে রাজধানীতে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে দে’হ ব্য’ব’সা। চোখ ধাঁধানো ছবি আর শারীরিক তথ্যের নিচে দেওয়া থাকে যোগাযোগের জন্য মোবাইল নম্বর।

এভাবেই ব্যবসায় চালিয়ে যাচ্ছিল চক্রগুলো। করোনাকালের আগে বিভিন্ন তারকা হোটেলে প্রিয়াদের ডাক পড়লেও, এখন তা চলে ফ্ল্যাটে। প্রতি ঘণ্টা হিসেবে গুনতে হয় টাকা।

একসময় ‘রাতের রানী’ কিংবা ‘নাইট কুইন’ হিসেবে পরিচিতি থাকলেও প্রিয়াদের দেখা মিলছে এখন দিন-দুপুরে। যখন-তখন। ভার্চুয়াল-একচুয়াল।

একটি ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেয়া রয়েছে, ‘সারাদেশে কঠোর লকডাউন তাই রুমে গিয়ে কাজ করা পসিবল নয়। তাই এখন থেকে ক্যাম সার্ভিস এভেইলবল..।’

ওয়েভ ক্যামে নিজেদের নগ্নভাবে উপস্থাপন করেন। অ’শ্লী’ল অ’ঙ্গ-ভ’ঙ্গি ও কথা বলেন, শব্দ করেন। এজন্য বিকাশে এডভান্স দাবি করেন তারা। প্রিয়া জানান, এই সার্ভিস বেশি নিয়ে থাকেন মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীরা।

কিছুদিন আগে একটি প্রতিবেদনের সূত্র ধরে অনলাইনে ‘স্কোয়াট সার্ভিস’ ব্যবসা চালানোর বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট। অনুসন্ধান করতে গিয়ে পুলিশ বেশকিছু সাইট ও ফেসবুক পেজের সন্ধান পায় যেগুলির মাধ্যমে যৌ’ন’ক’র্মী সরবরাহের বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছিল।

পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের ডেপুটি কমিশনার মহম্মদ আলিমুজ্জামান বলেন, এধরনের পেজ খুলে যৌ’ন’ক’র্মী সরবরাহের সার্ভিস যেমন দেওয়া হচ্ছিল, একইসঙ্গে আগ্রহী গ্রাহকদের ব্ল্যা’ক’মে’ল করা হচ্ছিল।

এসবের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য পুলিশ সেসময় ৭ জনকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা ও প’র্নো’গ্রা’ফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়।

এ বিষয়ে সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রা’ই’ম ডিভিশনের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি করা হচ্ছে। যারা অপরাধ করছেন। ন’গ্ন’তা, অ’শ্লী’ল’তা ছড়াচ্ছেন তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।