মিশরের সুন্দরীদের সাথে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিয়ে !

1402

মিসরীয় মেয়েকে বিয়ে – মিশরে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশটিতে বসবাসকারী বাংলাদেশির সংখ্যা দশ হাজারের উপরে। তাদের মধ্যে কেউবা এসেছেন জীবিকার খোজে। কেউবা পড়াশুনার জন্য।

এদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি এবং ব্যবসা বাণিজ্যে জড়িয়ে গেছেন। অনেকে আবার ঘর সংসারও শুরু করেছেন দেশটিতে। ইতোমধ্যে দেশটিতে প্রায় চারশতেরও অধিক বাঙালি মিসরীয় মেয়েকে বিয়ে করেছেন। এ সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে।

এমনই একজন হচ্ছেন বরিশাল বাবুগঞ্জ থানার পূর্ব কেদারপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ হাওলাদারের ছেলে প্রবাসী বাংলাদেশী সজল হাওলাদার। কঠোর পরিশ্রমী সজল ২০১০ সালে মিশরে আসেন জীবিকার খোঁজে।

আসার পর তিনি কায়রো শহরের আলমারজ, টেনথ রমাদান সিটিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় তিন বছর চাকরি করেছেনে। তারপর কায়রো শহরে ঘুরতে এসে পৃথিবীর বিখ্যাত হোসেন মসজিদের পাশে মিসরের সাবেক রাজধানী আলেকজান্দ্রিয়ার মেয়ের নোহার সাথে তার পরিচয় হয়। সেই পরিচয় থেকে ধীরে ধীরে প্রেম, এবং তারও পর বিয়ে।

পরবর্তীকালে সজল হাওলাদার সেই মিশরীয় রমনির হাত ধরে, তার সহযোগিতায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য আলেকজান্দ্রিয়া শহরে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন একটি বাংলা রেস্টুরেন্ট।

লোহিত সাগরের তীরবর্তী অঞ্চলে একটি সুন্দর এবং মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা এই রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশী সব ধরনের খাবার পাওয়া যায় । পুরো মিশরজুড়ে তাদের এই রেস্টুরেন্টটি এরই মধ্যে অনেক সুনাম কুড়িয়েছে।

সেখানেই একদিন এই দম্পতির সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। সজল ও তার স্ত্রী নোহার কাছে জানতে চেয়েছিলাম তাদের প্রেম ও বিয়ের কথা। নোহা বলেন, সম্পর্কটা আল্লাহ কখনো মানচিত্র দেখে নির্ধারণ করেন না। কে বাঙালি, কে চায়নিজ- এসব কোন বিষয় নয়। আল্লাহ শুধু দেখেন আমাদরে নফস।

অন্তরের মিলের কারণেই সম্পর্ক তৈরি হয়। নিজেদের সম্পর্কের কথা বলতে যেয়ে নোহা জানান, মিশর ও বাংলাদেশ দুটি ভিন্ন দেশ ভিন্ন সংস্কৃতি হলেও আমাদের মৌলিক মিলটি ছিল ধর্ম। আমরা উভয়েই মুসলিম।

সেটাই আমাদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি।তিনি বলেন, আগে আমি বাংলাদেশ সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতাম না। আমি তাকে (সজলকে) তার পরিষ্কার মনের কারণে ভালোবেসেছি। আর এখন তাকে আমি স্বামী হিসাবে খুব ভালোবাসি।

বিয়েএর মাঝে নোহা বাংলাদেশেও এসেছেন। বাংলাদেশকে তিনি অভিহিত করেছেন একটি ন্যাচারাল এবং জাদুকরি দেশ হিসাব। তার কাছে ভালো লেগেছে বাংলাদেশের শিক্ষা পদ্ধতি।

বিশেষ করে ছেলেমেয়েদের এক সাথে পাঠদানের বিষয়টি তাকে মুগ্ধ করেছে বলে জানান তিনি। বাংলাদেশী খাবারের মধ্যে নোহার প্রিয় হচ্ছে- পুই শাক, চিংড়ি মাছ ভর্তা, আলু ভর্তা, টমেটো ভর্তাসহ সব ধরনের ভর্তা।

মিশরে অবস্থানরত যে সকল বাংলাদেশী যুবক মিশরীয় নারীদের প্রতি আগ্রহী তাদের প্রতি একটি উপদেশ উচ্চারণ করেন নোহা।

বলেন, এদেশে থাকা সমস্ত বাংলাদেশী পুরুষ এবং মিসরীয় নারীদেরকে আমি বলবো যদি তুমি আল্লাহকে ভয় করো, যদি গভীরভাবে প্রেম করতে পারো, তাহলে বিয়ে করো, আর যদি পরস্পরকে গভীরভাবে ভালবাসতে না পারো তাহলে বিয়ে করো না।

কোন বাংলাদেশির যদি দেশেও বউ থাকে, আবার এখানেও বিয়ে করতে চায়, তাহলে এই জুলুমটা যেন কোন দেশের নারীর উপর না হয়। আমি দূতাবাসের কাছে বলব তারা যেন বাংলাদেশের মানুষকে এখানে বিয়ে করার অনুমতি দেয় । শুধু বাংলাদেশ নয় পাকিস্তান ও ভারতীয়দেরও যেন অনুমতি দেওয়া হয়।