ভার্চুয়ালে কামনার ঢেউ তোলেন তাহমিনা

2275

বসের আবদার। না রাখলে চাকরি থাকে না। ইভেন্ট ম্যানাজারের কথা না শুনলে কাজ জুটে না। মূলত অর্থ উপার্জনের জন্যই তাদের ডাকে সাড়া দিতেন তাহমিনা নামের এই তরুণী।

ফরমাল পোশাক ও ভদ্রচেহারার আড়ালে মনোরঞ্জন করতেন বসের। তাহমিনার কদর ছিলো বেশ।

তাই বস থেকে বসের বন্ধু এভাবে সেবা গ্রহিতার সংখ্যা বাড়তেই থাকে। তারপর এক পর্যায়ে চাকরিটা চলে যায় তার। বেছে নেন অন্য প্ল্যাটফর্ম। যেখানে তিনি স্বাধীন। এখন কথায় কথায় কামনার ঢেউ তোলেন। সেইসঙ্গে কথাও বলে তার শরীর।

যেখানে তাহমিনাসহ রয়েছেন রাজধানী ঢাকার অসংখ্য তরুণী। তারা রাতের পাখি। রাত গভীর হলেই নিত্য নতুন সাজে নিজেকে প্রদর্শন করেন।

আবেদনময়ী বাক্যে, শারীরিক অঙ্গ-ভঙ্গিতে সৃষ্টি করেন তীব্র আকর্ষণ। দর্শকদের আকাঙ্খা পূরণে একধাপ এগিয়ে থাকনে তারা। প্রদর্শণ করেন শরীরের বিভিন্ন অংশ। এর সবই ঘটে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। 

স্বল্প বসনা এসব তরুণীদের ফলোয়ারের সংখ্যা বিপুল।  রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এক একটি আইডিতে হাজির হন বহু ব্যবহারকারী।  উদ্দাম নাচ, গান থেকে শুরু করে ঘটে অনেক কিছুই।

এই অনেক কিছুর শুরু এই ভার্চুয়াল লাইভ থেকেই। লাইভে দেয়া হয় বিকাশ নম্বর। টাকা পেলেই তবে ব্যক্তিগত ইমো বা হোয়াটসঅ্যাপে হাজির হন তরুণীরা। রাত জেগে পুরুষদের মনোরঞ্জন করে কামিয়ে নিচ্ছেন হাজার-হাজার টাকা। কথা হয়েছে এরকম কয়েক জন তরুণী ও তাদের ফলোয়ারদের সঙ্গে।

তাদের একজন তাহমিনা। খুব ভালো না হলেও নাচ ও গান করতে পারেন তিনি। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা এই তরুণী গান করেছেন বিভিন্ন মঞ্চে।

কিন্তু গান করে যা আয় হতো তা দিয়ে সংসার চালানো ছিলো কষ্টকর। পরিবারের অসুস্থ মা, ছোট এক ভাই ও বোন রয়েছে। বাবাকে হারিয়ে মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়েই হাল ধরেন সংসারের।

তাহমিনা জানান, লেখাপড়া কম তাই ভালো চাকরির পেছনে ছুটতে পারছিলেন না। মঞ্চে গান করেও ভালো কিছু হচ্ছিলো না। প্রতিটি ক্ষেত্রেই কাজের বিনিময়ে একান্তে সময় কাটানোর প্রস্তাব দেয়া হতো। রাজি না হলে কাজ বাতিল বা টাকার পরিমাণ কমে যেতো।


রিসিপশনিস্ট পদে চাকরি করেছিলেন একটি কর্পোরেট হাউজে। বসের ডাক আসে বারবার। কখনও বাসায়, কখনও হোটেলে। বাধ্য হয়েই সাড়া দেন। তারপর রিসিপশনিস্ট পিএ। এবার বসের সঙ্গে যান দেশের বিভিন্নস্থানে। এমনকি বেশ কয়েক দেশেও।

স্লীম ফিগার, ফর্সা সুন্দর মায়াবী চেহারা। বসের কাছে বেশ কদর। এবার বসের বন্ধুরা ভাগ বসাতে চান। আপত্তি জানান তাহমিনা। বিষয়টি নিয়ে বস ক্ষুব্ধ। শেষ পর্যন্ত চাকরি চলে যায় তাহমিনার।

দুশ্চিন্তায় বেশ কিছুদিন। ওই সময়েই এক বান্ধবীর মাধ্যমে খোঁজ পান বিগো লাইভের। লাইভ স্ট্রিমিংয়ের এই প্ল্যাটফর্মে আইডি করে শুরু করেন যাত্রা। যেখানে ওয়েবসাইটটির ব্যবহারকারীরা সরাসরি তাদের ফলোয়ারদের সাথে ভিডিও স্ট্রিমিং করতে পারে। তাহমনিা লাইভে যান। কথায় কথায় কামনার টেউ তোলেন। 

লাইভে গিয়ে আগ্রহীদের কাছে দেন বিকাশ নম্বর। দাবি করেন ঘন্টা প্রতি পাঁচ হাজার। ৩০ মিনিটে তিন হাজার। বিকাশে টাকা পেলেই দরজা খোলেন ইমুর। ইমুতে ভার্চুয়াল প্রশান্তি দেন তিনি। বিনিময়ে উপার্জন করেন টাকা। এভাবেই রাতের পর রাত জাগেন। তাহমিনার মতো অনেকেই।