খালি পেটে কলা খেলে কী হয় ? জেনে নিন

4487

খালি পেটে কলা- সকালে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে পড়েছেন, খাওয়ার সময় পাননি।‌ কিংবা বিকেলে পড়া–ক্লাস সব সেরে আর খাওয়ার সময় পাওয়া যায়নি।

অতএব উপায়!‌ দোকান থেকে কলা কিনে খেয়ে ফেলা। কারণ ফলের মধ্যে এটাই তো স্বাস্থ্যকর।

রোজকার দিনে এরকম করে থাকেন এমন অনেকেই কিন্তু আছেন। পেট হয়ত ভরে গেল, কিন্তু জানেন কী?‌ খালি পেটে কলা খেয়ে আখেরে নিজেরই ক্ষতি করছেন।

উচ্চ মাত্রার পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম বিদ্যমান থাকায় কলা পুষ্টিকর একটি খাবার। এর নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। কলা হার্ট ভালো রাখে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, কোষ্ঠকাঠিন্য, আলসারের মতো রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন বাড়াতে এবং অ্যানিমিয়া দূর করতেও কলার জুড়ি মেলা ভার।

কলায় শতকরা ২৫ ভাগ চিনি থাকে এবং এগুলো শরীরে শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু এগুলো তখনই হতে পারে, যখন পেট ভরা থাকে। খালি পেটে কলা খেলে কিন্তু সমূহ বিপদ।

খালি পেটে কলা খেলে কী হয়?

পুষ্টিগুণের কারণেই অনেকে সকালে খালি পেটে কলা খেয়ে থাকেন। ভাবেন, অন্য অনেক খাবারের মতো এটিও শরীরে অনেক পুষ্টি জোগাবে। কিন্তু কয়েকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কলায় উচ্চ মাত্রার চিনি বিদ্যমান রয়েছে যা শরীরে শক্তি জোগাতে কাজ করে।

তাই আপনি যদি সকালে খালি পেটে কলা খান, তাহলে আপনার শক্তি কয়েক ঘণ্টা পরই বেরিয়ে যাবে। এর ফলে আপনি অলস হয়ে পড়বেন। ক্লান্ত লাগবে এবং ঘুম পাবে। তাই খালি পেটে কলা না খাওয়াই ভালো।

অ্যাসিডিক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকায় শুকনো কিছু খাবারের সঙ্গে কলা মিলিয়ে খাওয়া ভালো। তা না হলে শরীরে উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেশিয়ামের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। এতে হৃদয়ের রোগ হওয়ার শঙ্কাও দেখা দেয়। শুধু সকালে কলা নয়, বরং কোনো ফলই খালি পেটে খাওয়া উচিত নয়।

কারণ এখনকার দিনে সতেজ কোনো ফল খুঁজে পাওয়া যায় না বললেই চলে। এ ছাড়া ফলগুলোতে নানা রাসায়নিক থাকে। তাই সকালে খালি পেটে এসব খাবারের রাসায়নিকগুলো সরাসরি পেটে প্রবেশ করে। তখন পুষ্টি সরবরাহ করার বদলে এগুলো শরীরে নানা স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করে।

হাড় সুস্থ রাখতে করনীয়

হাড় আমাদের সমস্ত শরীরের ভার বহন করে। সুস্থ ও টেকসই হাড় পেতে হলে শৈশব থেকেই সচেতন হওয়া জরুরি। কেননা, পিক বোন মাস বা হাড়ের সর্বোচ্চ ঘনত্ব আমরা লাভ করি ৩০ বছর বয়সের আগেই। এরপর হাড়ের ঘনত্ব আর বাড়ে না, বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে। হাড়ের সুস্থতা নির্ভর করে এই অল্প বয়সে অর্জিত হাড়ের ঘনত্ব, স্থিতিস্থাপকতা ও খনিজের ওপর।

তাহলে কী করে আমরা হাড়ের এই সুস্থতা নিশ্চিত করতে পারি?

চাই যথেষ্ট খনিজ: একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দিনে ১০০০ মিলিগ্রাম ও নারীর ১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা উচিত। নারীদের অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্য পান করানোর সময় এবং মেনোপজের পর এই ক্যালসিয়ামের চাহিদা আরও বেশি। উচ্চ ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার হচ্ছে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, নানা ধরনের ছোট মাছ ও সামুদ্রিক মাছ, সবুজ পাতাযুক্ত শাক, বাদাম ইত্যাদি। শৈশব ও কৈশোর থেকে ভালো মানের ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার যথেষ্ট খেলে মজবুত হাড় পাওয়া সম্ভব।

ভিটামিন ডি: হাড় সবল রাখার জন্য পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি দরকার। সূর্যালোকে আছে এই ভিটামিন। তাই দিনের একটি সময় রোদে হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করা উচিত। এই অভ্যাস থাকা দরকার সব বয়সই। এ ছাড়া তৈলাক্ত মাছ, মাশরুম, ডিম ইত্যাদিতে আছে ভিটামিন ডি।

ব্যায়াম: নিয়মিত কায়িক শ্রম ও ব্যায়াম হাড়সন্ধিকে মজবুত করে। অল্প বয়সে তো বটেই, এমনকি বেশি বয়সেও নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম করতে পারলে হাড়ক্ষয় বা ভঙ্গুর হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে।

ওষুধ ও ধূমপান: ধূমপান হাড়ের ভঙ্গুরতা বাড়ায়। এ ছাড়া যাঁরা দীর্ঘদিন স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ, খিঁচুনির কিছু ওষুধ, মিথোট্রেক্সেট, ওমিপ্রাজল ইত্যাদি সেবন করেন, তাঁদের অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ে।

রোগবালাই: কিছু কিছু রোগ, যেমন রিউমাটয়েড আরথ্রাইটিস, হাইপোগোনাডিজম ইত্যাদির কারণে হাড়ক্ষয় বেশি হয়। নারীদের মেনোপজের পর বেড়ে যায় হাড়ক্ষয়ের আশঙ্কা। তাই বয়স্ক নারীদের খাবারদাবার ও ব্যায়ামের দিকে বেশি সচেতনতা দরকার। যাঁদের সময়ের আগেই মেনোপজ হয়েছে (যেমন অল্প বয়সে জরায়ু ফেলে দেওয়া) তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শে হরমোন থেরাপি নিতে পারেন।

হাড়ক্ষয়ের মাত্রা জানতে এখন বিশেষ পরীক্ষা করে নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেওয়া যায়। তাই প্রয়োজনে চিকিৎসা নিন।