সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইতালিতে ২০ হাজার লোকের ইসলাম গ্রহণ- গোটা ইউরোপে যখন ইসলাম আ”ত”ঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে তখন ইসলাম গ্রহণের হার কমেনি। সম্প্রতি ইউরোপে ইসলাম সর্ম্পকে মানুষের জানার আগ্রহ বাড়ছে। বাড়ছে ইসলাম গ্রহণকারীর সংখ্যা।
এমন প্রেক্ষাপটে ২০১৬ সালে ইতালির সাবেক একজন পার্লামেন্ট সদস্যর মেয়ের ইসলাম গ্রহণ নিয়ে দেশটিতে সৃষ্টি হয়েছিল তোলপাড়। ম্যানুয়েলা ফ্রাংকো বারবাতো নামের এই তরুণীর এখন নতুন নাম আয়েশা।
ইসলাম গ্রহণের পর ইসলামের অনুশাসন তিনি মানছেন। পূর্ণাঙ্গ হিজাবী এই নারী ইতালির এক সাবেক এমপি ফ্রাংকো বারবাতোর মেয়ে। তিনি তার বাবার খ্রিষ্টধর্ম থেকে ইসলামে দীক্ষিত হয়েছেন।
ম্যানুয়েলার এই ইসলাম গ্রহণের ঘটনা এখন ইতালিতে আলোচনার বিষয়। খ্রিষ্টান উ”গ্র”প”ন্থী”রা কঠোরভাবে সমালোচনা করছেন তার। সমালোচনা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না তার বাবাও। ফ্রাংকো বারবাতোকে হাফিংটন পোস্টের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনার মেয়ে তো মুসলমান হয়ে গেল, এখন আপনার কেমন লাগছে?
তার উত্তর ছিল, ‘শুধু খারাপ না, খুবই খারাপ লাগছে। কারণ এটি একটি অত্যন্ত কঠোর ধর্ম, খুবই চ”র”ম”প”ন্থী, একদম সেকেলে! এই ধর্মটি মৌ”ল”বা”দী। আমার মেয়ে আমার সাথে থাকাবস্থায় আমি নিজে দেখেছি। প্রতিদিন দেখেছি নামাজের সময় হলে সে সন্তানের কথাও ভুলে যায়!
এজন্য আমি তার প্রতি রাগ করতাম। সে যা নিজের জন্য পছন্দ করেছে আমি তাতে খুবই ব্যাথিত।
তবে আয়েশা ইসলাম গ্রহণ করতে পেরে খুবই আনন্দিত, সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, ‘আমার আত্মার পরিশুদ্ধির জন্য আমি গর্বিত।
এসব আল্লাহর নিয়ম, আমার অভিযোগ করার কী আছে?’ নিজের হিজাব পরিধান নিয়ে চারপাশে যত কথা। তার উত্তরে আয়েশা বলেন, ‘হিজাব আমার জীবনের অংশ, যা আল্লাহ আমার জন্য পছন্দ করে দিয়েছেন।’
আয়েশা আগে বাবার সাথে থাকলেও প্রকাশ্যে ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দেয়ার পর তার স্বামীকে নিয়ে ভারতে চলে গেছেন।
সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের গ্রাজুয়েশন করছেন। বিবাহিত জীবনে তার দুই শিশু সন্তান রয়েছে। ইতালিতে ১৭ লাখ মুসলমানের বসবাস। ইতালীর সরকারি সংস্থার হিসাবে দেশটিতে প্রায় বিশ হাজার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্যান্য ধর্ম থেকে ইসলাম গ্রহণ করেছেন।
ইতালির এই চিত্র প্রমাণ করে ইউরোপে ক্রমবর্ধমান ধর্ম হিসাবে ইসলামের প্রসার ঘটছে। হাফিংটন পোস্ট অবলম্বনে জুমবাংলানিউজ/এসওআর জার্মান ফুটবলার ওজিলের সঙ্গে এরদোগানের ইফতারের ছবি ভা’ই’রা’ল। আর্সেনালের জার্মান মিডফিল্ডার মেসুত ওজিলের সঙ্গে ইফতার করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। গেল শনিবার ইস্তানবুলে ইফতার করেন তারা।
এদিন অটোমান যুগের দলমাবাহাস রাজপ্রাসাদে রাজকীয় ইফতার পার্টি হয়। এতে এরদোগানের টেবিলের একপাশে বসেন ওজিল ও তার বাগদত্তা এমিনে গুলসে। এ সময় হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায় তাদের।
ইতিমধ্যে সেই ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। শিগগির বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন ওজিল। দীর্ঘদিনের বান্ধবী গুলসের সঙ্গেই গাঁটছড়া বাঁধছেন তিনি। বহুল প্রতীক্ষিত এ বিয়েতে অতিথি হিসেবেও দেখা যেতে পারে এরদোগানকে। ইতিমধ্যে তুর্কি প্রেসিডেন্টের হাতে বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র তুলে দিয়েছেন ওজিল ও গুলসে।
সবাই তুরস্কে ব্যাপক জনপ্রিয়। সেই ছবি নিয়েও সমালোচনা হয়। ওজিল জার্মানির হয়ে খেললেও জাতিতে তুর্কি। তার হবু স্ত্রীও তুর্কি বংশোদ্ভূত। পেশায় মডেল ও অভিনেত্রী গুলসে অবশ্য সুইডেনের নাগরিক।
গেল বছর বর্ণবৈষম্য ও অসম্মানের অভিযোগ এনে জার্মান জাতীয় ফুটবল দল থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ওজিল। এর নেপথ্যেও ছিলেন এরদোগান।
রাশিয়া বিশ্বকাপের আগে তুরস্ক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ওজিল। পরে এর একটি ভিডিও ক্লিপ নিজের ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন তিনি। তাতে দেখা যায়, এরদোগানকে আর্সেনালের জার্সি উপহার দিচ্ছেন এ মিডফিল্ডার। বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেননি জার্মানরা।
ডানপন্থী রাজনীতির কারণে এরদোগানের ভাবমূর্তি নিয়ে পশ্চিমাবিশ্বে প্রশ্ন আছে। এমন একজনের সঙ্গে ছবি তোলায় জার্মানদের মূল্যবোধ নষ্টের অভিযোগ তোলা হয় ওজিলের বিরুদ্ধে। তবু তাকে বিশ্বকাপের দলে রাখেন কোচ জোয়াকিম লো।
বিপত্তিটি বাধে প্রথম রাউন্ড থেকে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা বিদায় নিলে। ব্যর্থতার দায় এসে পড়ে ওজিলের কাঁধে। ফলে উগ্র সমর্থকদের কাছ থেকে ঘৃ”ণি”ত বার্তা হতে শুরু করে মৃ”ত্যু”র হুমকিও পান তিনি। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে জাতীয় দল থেকে অবসর নেন ২৯ বছরের মিডফিল্ডার।
নামাজ পড়ে সালাম ফেরানোর আগে যে দোয়াগুলো পড়তেন বিশ্বনবি (সা.)
মুমিন মুসলমানের জন্য ফরজ ইবাদত নামাজ। নামাজের যেসব জায়গায় মনের ইচ্ছা মতো দোয়া করা যায় তন্মধ্যে সালাম ফেরানোর আগেও একটি। নামাজের সালাম ফেরানোর আগে মনের ইচ্ছা মতো দোয়া করা যায়। এগুলোকে দোয়ায়ে মাছুরাও বলা হয়।
হাদিসে সালাম ফেরানোর আগে পড়ার অনেক গুলো দোয়া এসেছে। যার কয়েকটি তুলে ধরা হলো-
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাদেরকে এই দোয়াটি এভাবে শেখাতেন, যেভাবে কুরআনের সুরা শেখাতেন। তিনি বলতেন-
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবি ঝাহান্নাম। ওয়া আউজুবিকা মিন আজাবিল ক্ববর। ওয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসীহিদ দাঝ্ঝাল। ওয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাত। আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল্ মাছামি ওয়া মিনাল মাগরাম।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে জা’হা’ন্না’মের আ’জা’ব থেকে আশ্রয় চাই, কবরের আ’জা’ব হতে আশ্রয় চাই। আশ্রয় চাই দা’জ্জা’লের ফিতনার পরীক্ষা থেকে। তোমার কাছে আশ্রয় চাই জীবন ও মৃ’ত্যু’র পরীক্ষা থেকে এবং তোমার কাছে আশ্রয় চাই পা’প ও ঋণের বোঝা থেকে।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)
হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একবার আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললাম, আমাকে একটি দোয়া শিখিয়ে দিন। যা আমি নামাজে পড়বো। তখন তিনি বললেন, তুমি বল-
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু নাফসি জুলমান কাছিরাও ওয়া লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আংতা ফাগফিরলি মাগফিরাতাম মিন্ ইন্দিকা ওয়ার হামনি ইন্নাকা আংতাল গাফুরুর রাহিম।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আমার উপর অত্যধিক অ’ত্যা’চা’র করেছি এবং তুমি ব্যতিত পা’প ক্ষ’মা করার কেউ নেই। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষ’মা করে দাও। ক্ষ’মা একমাত্র তোমার পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। আমার প্রতি রহম কর। নিশ্চয়ই তুমি ক্ষ’মা’শীল ও দয়ালু।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)
হজরত আবু মুসা রাদিয়াল্লাহু আনহু তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তার পিতা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দোয়া পড়তেন-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগফিরলি মা ক্বাদ্দামতু ওয়া মা আখখারতু ওয়া মা আসরারতু ওয়া মা আলানতু ওয়া মা আসরাফতু ওয়া মা আংতা আলামু বিহী মিন্নি আংতাল মুক্বাদ্দিমু ওয়া আংতাল মুয়াখখিরু লা ইলাহা ইল্লা আংতা।’ (মুসলিম)
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার আগের ও পরের সব গোপন ও প্রকাশ্য গো’না’হ ক্ষ’মা কর (এবং ক্ষ’মা কর সেসব গো’না’হ) যাতে আমি বাড়াবাড়ি করেছি। আর সেসব গো’না’হ যে বিষয়ে তুমি আমার চেয়ে বেশি জান। তুমি প্রথম এবং শেষের মালিক। তুমি ব্যতিত কোনো উপাস্য নেই।’
হজরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাছ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ শব্দ গুলো দ্বারা ক্ষ’মা চাইতেন-
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বুখলি ওয়া আউজুবিকা মিনাল জুবনি ওয়া আউজুবিকা মিন আন্ উরাদ্দা ইলা আরযালিল ওমুরি ওয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিদ দুনইয়া ওয়া আউজুবিকা মিন আজাবিল ক্বাবরি।’ (বুখারি ও মিশকাত)
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা থেকে, কাপুরুষতা থেকে, বার্ধক্যের চরম দুঃখ-কষ্ট থেকে, দুনিয়ার ফেতনা-ফাসাদ ও কবরের আ’যা’ব থেকে।’
হজরত মুআয ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার হাত ধরে বললেন, হে মুআয! নিশ্চয়ই আমি তোমাকে ভালবাসি, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমিও আপনাকে ভালবাসি। তিনি বললেন, মুআয তুমি প্রত্যেক ছালাতের শেষে এই দোয়াটি কখনো পড়া থেকে বিরত থেকো না-
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা আ-ইন্নি আলা জিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ইবাদাতিক।’ (মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, নাসাঈ, মিশকাত)
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনাকে স্মরণ করার জন্য, আপনার শুকরিয়া আদায় করার জন্য এবং আপনার সুন্দর ইবাদত করার জন্য আমাকে সাহায্য করুন।’
হজরত বুরাইদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একজন লোককে বলতে শুনলেন-
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আস্আলুকা বি-আন্নি আশহাদু আন্নাকা আন্তাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আন্তাল আহাদুস সামাদুল্লাজি লাম্ ইয়ালিদ্ ওয়া লাম্ ইউলাদ্ ওয়া লাম্ ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট চাই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি এক মাত্র তুমিই আল্লাহ। তুমি ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই। তুমি একক অমুখাপেক্ষী। যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কারো থেকে জন্ম নেননি। তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।’ (আবু দাউদ)
তারপর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, অবশ্যই সে আল্লাহকে এমন নামে ডেকেছে, যে নামে চাওয়া হলে তিনি দান করবেন এবং প্রার্থনা করা হলে তিনি কবুল করেন।
প্রকাশ থাকে যে, নামাজের মধ্যে সালাম ফেরানোর আগে কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক যে কোনো দোয়াই পড়া বৈধ। (বুখারি)
তবে নামাজের মধ্যে আপন আপন ভাষায় দোয়া করা যাবে না। এমনকি আরবিতেও নিজের বা কারো বানানো দোয়া পড়া যাবে না। শুধুমাত্র কুরআন-সুন্নায় বর্ণিত দোয়া পড়তে হবে।
কেননা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষের ভাষাকে নামাজে ব্যবহার করাকে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ মানুষের কথা বলার ক্ষেত্র নয়। এটাতো কেবল তাসবিহ, তাকবির ও কুরআন তেলাওয়াতের জন্যই সুনির্দিষ্ট।’ (মুসলিম,আবু দাউদ, নাসাঈ, মুসনাদে আহমদ)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নামাজের সালাম ফেরানোর আগে কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক মাসনুন দোয়া গুলো যথাযথ ভাবে পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।