বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে নিজেই বস্তিতে ছুটে যান মহান এই চিকিৎসক !

1456

বিনামূল্যে চিকিৎসা- বর্তমান সময়ের উচ্চ ডিগ্রিধারী একজন চিকিৎসকের নাম শুনলে রোগীরা আঁতকে ওঠেন। হাজার টাকা ‘ফি’ দিয়েও দুদণ্ড মন খুলে অসুখের কথা বলতে পারেন না। চেম্বারে ঢুকতে না ঢুকতেই খচ খচ করে প্রেসক্রিপশনে একগাদা ওষুধের নাম ও একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কথা লিখে দেন অধিকাংশ চিকিৎসক।

রিপোর্ট দেখাতে গেলেও গুনতে হয় ভিজিটের অর্ধেক টাকা। কিন্ত এ সমাজেই রয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী মানবদরদি উচ্চ ডিগ্রিধারী বেশ কিছু চিকিৎসক। তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে এবং অনেকটা প্রচারবিমুখ হয়েই নীরবে মানবসেবা করে যান।

তাদেরই একজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইএনটি (নাক, কান ও গলা) বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল আলম। এফসিপিএস ডিগ্রিধারী এই অধ্যাপক গরিব-দুঃখী মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিতে নিজেই ছুটে যান বস্তিতে।

চেয়ার-টেবিলে বসে নয়, রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিংবা আন্ডারড্রেনের জন্য রাস্তার পাশে পড়ে থাকা বড় বড় ম্যানহোলের পাইপের মধ্যে বসে পরম স্নেহে পথশিশুসহ রোগী দেখেন। বিনামূল্যে প্রেসক্রিপশন ও অনেক সময় ওষুধও দেন।

শুধু তাই নয়, অপেক্ষাকৃত কম টাকায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগও করে দেন। রাজধানীর ধানমন্ডির হ্যাপি প্লাজায় স্বল্পমূল্যে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র ও অসহায়সহ সকলের জন্য খুলেছেন ‘সুলভ চিকিৎসা’ নামে একটি চেম্বার। যেখানে অধ্যাপকরা হাজার টাকা ভিজিটে রোগী দেখেন, সেখানে তিনি নামমাত্র ভিজিটে অর্থাৎ মাত্র ১০০ টাকায় রোগী দেখেন। পর্দার অন্তরালে থাকা প্রচারবিমুখ মানবদরদি এই অধ্যাপকের নাম ধীরে ধীরে লোকমুখে ছড়িয়ে পড়েছে।

তার সঙ্গে আলাপকালে অধ্যাপক ডা. মনজুরুল আলম বলেন, ‘তিনি ১৯৯৭ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ও পরবর্তীতে এফসিপিএস পাস করার পর থেকেই নিজ জন্মভূমি নওগাঁ জেলার মানুষের জন্য বিভিন্ন সরকারি ছুটি ও বিশেষ দিনে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান শুরু করেন। তাদের জন্য বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য ক্যাম্প করে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন।’

গত দুবছর ধরে তিনি রাজধানীর মুগদা, মান্ডা, মোহাম্মদপুর, বসিলা ও কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বস্তিবাসী পথশিশুসহ বিভিন্ন বয়সী দরিদ্রদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিচ্ছেন।

শুরুর দিকে শুধুমাত্র নাক, কান ও গলার চিকিৎসা দিলেও বর্তমানে তার সঙ্গে বিএসএমএমইউর বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির চিকিৎসকরা যোগ দিয়েছেন। প্রথমদিকে তিনি বস্তিতে চিকিৎসা দিতে একাই ছুটে যেতেন। এখন তার জুনিয়ররাও তার সঙ্গে যান।

প্রতিমাসে কমপক্ষে একবার তিনি বস্তিতে ছুটে যান বলে তিনি জানান। নওগাঁ ছাড়াও অন্যান্য জেলায় বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে স্বাস্থ্য ক্যাম্প করার ইচ্ছা আছে তার।

বিনামূল্যে গরিব ও দুঃখী মানুষকে সেবা দেয়ার মাঝেই নির্মল আনন্দ খুঁজে পান জানিয়ে ডা. মনজুরুল আলম বলেন, বস্তির লোকজন যখন বিনামূল্যে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়, তার জন্য দুহাত তুলে দোয়া করে, তখন তিনি চিকিৎসক হওয়ার সার্থকতা খুঁজে পান।

বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সমাধানে অ্যালোভেরার গুণাবলি !

অ্যালোভেরার অনেক গুণ- বহুল পরিচিত ও ব্যবহৃত একটি উদ্ভিদ হলো অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী। এই উদ্ভিদের গুণের কোনো অভাব নেই। অ্যালোভেরা খুবই সহজলভ্য এই উদ্ভিদ। রস হিসেবে খাওয়া যায় আবার ত্বকের ব্যথায় প্রতিষেধক হিসেবেও লাগানো যায়।

এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, জিংক, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ফলিক অ্যাসিড, অ্যামিনো অ্যাসিড ও ভিটামিন-এ, বি৬ ও বি২ ইত্যাদি, যা স্বাস্থ্য রক্ষার বিভিন্ন কাজে লাগে।

হজম প্রক্রিয়া :

হজম শক্তি বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরার তুলনা হয় না। এর অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান পাকস্থলীর সমস্যা এবং গ্যাসের সমস্যা দূর করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস জল বা গুড়ের শরবতের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।

ডায়াবেটিস :

যারা ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত অ্যালোভেরা রস খেলে র’ক্তে’র গ্লুকোজের পরিমাণ কমিয়ে আনতে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।

চুলের যত্নে :

চুলের শুষ্ক ভাব এবং ত্বকে চুলকানি দূর করার জন্য অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারবেন। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান চুল পড়া ও খুশকির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে। তাই অ্যালোভেরা রসের সঙ্গে আমলকীর রস মিশিয়ে চুলে লাগালে এতে চুলের উজ্জ্বলতাও বেড়ে যাবে।

ত্বকের যত্নে :

বহু বছর ধরে ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ত্বকে র‌্যাশ, চুলকানি, রোদে পড়া দাগ দূর করতে অ্যালোভেরার তুলনা হয় না। যেকোনো উপটান বা প্যাক অথবা সরাসরি এই জেল লাগালে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ থাকে এবং বয়সের ছাপ মুছে যায়।

ওজন কমাতে :

ওজন কমাতে অ্যালোভেরার জুস অনেক বেশ কার্যকরী। অ্যালোভেরা জুসের অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান শরীরের জমে থাকা মেদ দূর করে এবং কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই ওজন কমাতে সাহায্য করে।

হার্ট ও দাঁতের যত্নে :

অ্যালোভেরার জুস কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রাখে। এটি দূষিত র’ক্ত দেহ থেকে বের করে দেয় এবং হৃদ যন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও অ্যালোভেরা জুস দাঁত এবং মাড়ির ব্যথা ও ইনফেকশন নিবারণে সহায়তা করে।